মেঘনায় ইলিশের টানাটানি, দাম ছুঁয়েছে আকাশ

আবু সালমান

ভরা মৌসুমেও লক্ষ্মীপুরের রামগতি ও কমলনগরের মেঘনা নদীতে ইলিশের দেখা মিলছে না। মৌসুমের আড়াই মাস কেটে গেলেও প্রত্যাশিত ইলিশ ধরা পড়ছে না জেলেদের জালে। সামান্য যে মাছ পাওয়া যাচ্ছে, তার দাম এতটাই বেশি যে সাধারণ ক্রেতার নাগালের বাইরে চলে গেছে।

বাজারে সংকট

জুন থেকে অক্টোবর পর্যন্ত সময় ইলিশ মৌসুম হিসেবে পরিচিত। এ সময়ে জেলেদের জালে নদী ভরপুর থাকার কথা থাকলেও এ বছর চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। উপজেলার আলেকজান্ডার, রামগতি বাজার, টাংকিরঘাট, মাতাব্বরহাট, লুধুয়া, নাজিরগঞ্জ ও মতিরহাট মাছঘাট ঘুরে দেখা গেছে— সরবরাহ কম, আর দাম চড়া। অনেকেই খালি হাতে ফিরে যাচ্ছেন বা বিকল্প মাছ কিনছেন।

দাম আকাশছোঁয়া

মাছ ব্যবসায়ীদের তথ্য অনুযায়ী—

  • এক কেজি ওজনের ইলিশ: ২,৫০০–৩,০০০ টাকা
  • ৬০০–৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ: ২,০০০–২,৫০০ টাকা
  • ৩০০–৪০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ: ১,২০০–১,৫০০ টাকা

ক্রেতারা বলছেন, এত দামে ইলিশ কেনা এখন মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে চলে গেছে। কারও কারও মতে, চলতে থাকলে “স্বপ্নের ইলিশ” কেবল স্বপ্ন হয়েই থাকবে।

জেলে ও ক্রেতাদের অভিমত

রামগতি বাজারের মাছ ব্যবসায়ী খলিল মাঝি জানান, “দিনভর নদীতে জাল ফেলেও সামান্য ইলিশ মেলে। এত কম মাছ বিক্রি করে জ্বালানির খরচও উঠছে না।” আলেকজান্ডার মাছঘাটে মাছ কিনতে এসে ক্রেতা আব্দুর রব মিয়া বলেন, “বাজারে মাছ কম, দামও বেশি। তাই ইলিশ না কিনে দেশি মাছ নিচ্ছি।” কমলনগরের জেলে ইমরান হোসেন বলেন, “আমরা নদীর ওপরই নির্ভর করি। মাছ না থাকলে সংসার চলে না। তবে কিছুটা ইলিশ পড়া শুরু হয়েছে, আশা করি সামনে পরিস্থিতি ভালো হবে।”

কর্তৃপক্ষের আশ্বাস

কমলনগর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তুর্য সাহা বলেন, “বৈরী আবহাওয়ার কারণে গত সপ্তাহে জেলেরা সমুদ্রে যেতে পারেনি। সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছে। তবে এখন মাছ ধরা শুরু হয়েছে, আশা করছি আগামী সপ্তাহে দাম কিছুটা কমবে।” রামগতি উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সৌরভ-উজ-জামানও জানান, “আগামী সপ্তাহ থেকে ইলিশের সরবরাহ বাড়বে। বাজারে মাছ বাড়লে দামও স্বাভাবিক হবে।”

13 thoughts on “মেঘনায় ইলিশের টানাটানি, দাম ছুঁয়েছে আকাশ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

নামযের সময়সূচি