
এনামুল হক আরিফ
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঘোষিত কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় জেলা পরিষদ মার্কেট প্রাঙ্গণ থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে কালিবাড়ী মোড়, হাসপাতাল রোড ও টি.এ রোড প্রদক্ষিণ শেষে প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশে মিলিত হয়।
মিছিল ও সমাবেশ
বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন জামায়াতের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী, যুব সংগঠনের সদস্য, শিক্ষার্থী, পেশাজীবী ও সাধারণ সমর্থকরা। শহরের ব্যস্ত সড়কগুলোতে মিছিল চলাকালে জনসমাগম ও কৌতূহলের সৃষ্টি হয়।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেলা জামায়াতে ইসলামী’র আমীর মোবারক হোসেন আকন্দ। বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক জুনায়েদ হাসান, প্রচার সম্পাদক মো. রোকন উদ্দিন, যুব ও আইন বিষয়ক সম্পাদক কাজী সিরাজুল ইসলামসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

নেতৃবৃন্দের বক্তব্য
নেতারা বলেন, দেশে দীর্ঘদিন ধরে ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা চলছে। জনগণের প্রকৃত অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হলে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (PR) নির্বাচন ব্যবস্থা চালু করা সময়ের দাবি।
তাদের অভিযোগ, বর্তমান সরকার গণহত্যা, দুর্নীতি, দমননীতি ও নিপীড়নের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে স্তব্ধ করেছে। জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলীয় জোটের অগণতান্ত্রিক তৎপরতা রাজনৈতিক ভারসাম্য নষ্ট করছে। এ ধরনের দল ও জোটকে নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবি জানান তারা।
এছাড়া নেতারা ফেব্রুয়ারি ২০২৬ সালে ‘জুলাই জাতীয় সনদের’ ভিত্তিতে নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান জানান।
জামায়াতে ইসলামী’র ৫ দফা দাবি
১. জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন আয়োজন
২. আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক (PR) নির্বাচন ব্যবস্থা চালু
৩. ফ্যাসিস্ট সরকারের পদত্যাগ ও বিচার নিশ্চিতকরণ
৪. জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলীয় জোটের অগণতান্ত্রিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা
৫. নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন ও জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিতকরণ
প্রেক্ষাপট ও বিশ্লেষণ
বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরেই নির্বাচন পদ্ধতি ও ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে বিতর্ক বিরাজ করছে। ছোট রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পিআর পদ্ধতির দাবি পুরোনো হলেও সাম্প্রতিক সময়ে তা আরও জোরালো হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ব্যবস্থা চালু হলে সংসদে রাজনৈতিক বৈচিত্র্য বাড়বে এবং একক আধিপত্য কমে আসবে।

প্রশাসনের অবস্থান
মিছিল চলাকালে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সতর্কতা ও নজরদারি ছিল। শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েন থাকলেও কোনো ধরপাকড় বা বাধা দেওয়া হয়নি।
সাংবাদিক পর্যবেক্ষণ
সাংবাদিক এনামুল হক আরিফ মন্তব্য করেন—
“ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জামায়াতে ইসলামী’র এই কর্মসূচি রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। জনগণ এখনো গণতন্ত্র ও নির্বাচন ঘিরে সচেতন, আগ্রহী ও সক্রিয়—এটি প্রমাণ করেছে আজকের সমাবেশ।”
সারসংক্ষেপ টেবিল
বিষয় | বিবরণ |
---|---|
কর্মসূচির তারিখ | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ (শুক্রবার) |
স্থান | জেলা পরিষদ মার্কেট থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব |
আয়োজক | বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখা |
মূল দাবি | পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন, নিরপেক্ষ সরকার, ফ্যাসিস্ট শাসনের অবসান |
অংশগ্রহণকারী | কয়েক শতাধিক নেতাকর্মী ও সমর্থক |
প্রশাসনিক অবস্থান | সতর্ক নজরদারি, শান্তিপূর্ণ সমাপ্তি |
https://shorturl.fm/ZMQcu