‘ফিলিস্তিন মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আমরা পাশে থাকব’ — জামায়াতে ইসলামী

মোঃ জাকির হোসেন

ফিলিস্তিনের জনগণের স্বাধীনতা ও অধিকার আদায়ের সংগ্রামে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেছেন, “ফিলিস্তিন যতদিন মুক্ত না হবে, ততদিন আমরা তাদের পাশে থাকব। আমাদের লড়াই ও সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।”

জাতীয় মসজিদে বিক্ষোভ সমাবেশ
আজ শুক্রবার জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার যৌথ উদ্যোগে এক বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সম্প্রতি ইসরায়েল কর্তৃক আন্তর্জাতিক মানবিক ত্রাণবাহী নৌবহর আটক এবং এতে অংশগ্রহণকারী কর্মীদের আটকের ঘটনার প্রতিবাদে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

সমাবেশে রফিকুল ইসলাম খান বলেন,

“নিষ্ঠুর ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় একের পর এক গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে। নারী, শিশু, সাধারণ মানুষ— কেউই রেহাই পাচ্ছে না। অথচ আমরা প্রতিবাদ জানাচ্ছি, মিছিল করছি, আওয়াজ তুলছি এই হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে। বিশ্বের বহু দেশ আজ ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।”

ত্রাণবাহী জাহাজ আটক ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
সম্প্রতি ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ নামে একটি আন্তর্জাতিক মানবিক ত্রাণবাহী নৌবহর গাজার উদ্দেশ্যে যাত্রা করলে ইসরায়েলি নৌবাহিনী তা আটক করে।

  • নৌবহরটি স্পেন থেকে যাত্রা শুরু করে এবং পরে ইতালি ও গ্রিস থেকে আরও নৌযান যোগ দেয়।
  • এতে ৪৫টিরও বেশি বেসামরিক নৌযান অংশ নেয়, যা গাজার জনগণের জন্য খাদ্য, ওষুধ ও অন্যান্য মানবিক সহায়তা বহন করছিল।
  • বহরে অংশগ্রহণকারী প্রায় ৫০০ জন অধিকারকর্মী, চিকিৎসক, সাংবাদিক এবং বিভিন্ন দেশের সংসদ সদস্যের মধ্যে সুইডিশ জলবায়ু কর্মী গ্রেটা থুনবার্গ-ও ছিলেন।
    ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ভূমধ্যসাগরের আন্তর্জাতিক জলসীমায়, গাজা উপকূল থেকে ১২০-১২৯ কিলোমিটার দূরে নৌবহরটিকে বাধা দেয় এবং বেশ কয়েকটি জাহাজে উঠে অধিকারকর্মীদের আটক করে।
    আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
  • তুরস্ক এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে একে “ইসরায়েলি জলদস্যুতা” হিসেবে অভিহিত করেছে।
  • বাংলাদেশ সরকারও এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং এটিকে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন হিসেবে উল্লেখ করেছ। একই সঙ্গে আটককৃতদের অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানিয়েছে।
  • বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইসরায়েলের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ চলছে।
    জামায়াত নেতার মন্তব্য ও আহ্বান
    রফিকুল ইসলাম খান বলেন,

“ফিলিস্তিন ও গাজাকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পরও কিছু শক্তিধর রাষ্ট্র ইসরায়েলকে অস্ত্র ও কূটনৈতিক সমর্থন দিয়ে এই নৃশংসতায় অংশ নিচ্ছে। এটি মানবতার বিরুদ্ধে এক ধরনের রাজনৈতিক খেলা। কিন্তু আমরা বিশ্বাস করি শহীদদের রক্ত বৃথা যাবে না — ইনশাআল্লাহ ফিলিস্তিন একদিন স্বাধীন হবে।”

তিনি আরও বলেন,
“আমরা জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানাই — ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ করুন, দখলকৃত অঞ্চলগুলো মুক্ত করুন এবং ত্রাণবাহী জাহাজের সকল কর্মীকে অবিলম্বে মুক্তি দিন।”

সমাবেশে উপস্থিত অন্যান্য নেতৃবৃন্দ
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
এছাড়াও জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় ও মহানগর পর্যায়ের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করেন।

সংক্ষেপে মূল বার্তা:
ইসরায়েলের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির প্রতিবাদ জোরদার হচ্ছে। জামায়াতে ইসলামী স্পষ্টভাবে বলছে — ফিলিস্তিন মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত মুসলিম উম্মাহর সংগ্রাম চলবে।

3 thoughts on “‘ফিলিস্তিন মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আমরা পাশে থাকব’ — জামায়াতে ইসলামী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

নামযের সময়সূচি