নোয়াখালী প্রতিনিধি
প্রায় চার মাস সাগরের উত্তাল ঢেউ আর ঘূর্ণিঝড়ের সঙ্গে লড়াই করে নোয়াখালীর হাতিয়ার এমভি আহাদ-২ ট্রলারের ২১ জন জেলে এবার ঘরে ফিরেছেন উৎসবের আমেজে। প্রায় ৪০ লাখ টাকার মাছ আহরণ শেষে বাড়ি ফেরার আনন্দকে ভাগাভাগি করতে তারা ট্রলার সাজিয়ে, একই পোশাকে, গান-বাজনা আর নাচগানে মাতেন।
সমুদ্রযাত্রা ও সংগ্রাম
জেলেদের ভাষ্যমতে, দীর্ঘ চার মাস সাগরে কাটানো সময় ছিল প্রকৃতির সঙ্গে একরকম যুদ্ধের মতো। মাঝে ঘূর্ণিঝড়ের ভয়াল রাতগুলোয় মনে হয়েছিল আর হয়তো বেঁচে ফিরতে পারবেন না। কিন্তু অবশেষে আল্লাহর রহমতে বেঁচে ফেরা এবং মাছের ভালো শিকার তাদের আনন্দকে বহুগুণ বাড়িয়েছে।
জেলে মো. রাফুল বলেন, “সাগরে আমরা কেমন সময় কাটিয়েছি তা আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানে না। কখনো মনে হয়েছে বাঁচবো না। তাই আজ ঘরে ফেরা আমাদের কাছে ভিন্ন আনন্দের।”
অন্য জেলে মো. মামুন জানান, চার মাসে তার ভাগে এসেছে প্রায় ৪০ হাজার টাকা। সেই টাকায় নদীভাঙনে হারানো সংসারের জন্য নতুন জমি কিনেছেন। তার দাবি, সরকার যদি হাতিয়ার নদীভাঙন ঠেকাতে উদ্যোগ নিত, তবে তাদের জীবন আরও সহজ হতো।
ট্রলার সাজানোর উৎসব
এমভি আহাদ-২ ট্রলারের মাঝি শুভ চন্দ্র দাস বলেন, “প্রায় এক দশক ধরে আমি মাছ ধরি। ট্রলারটির বয়স মাত্র চার বছর। এখানে আমরা ২১ জন একসঙ্গে সংগ্রাম করি। এবারের ফেরা স্মরণীয় করে রাখতে ট্রলার সাজিয়েছি, সবাই একই পোশাক পরেছি। মালিক আরিফ মাঝিকে কৃতজ্ঞতা স্বরূপ পাঞ্জাবি উপহার দিয়েছি। পুরো খরচও আমি বহন করেছি।”
ট্রলারের মালিক ও মাঝি মো. আরিফ মাঝি জানান, এ বছর চার মাসে মাছ বিক্রি হয়েছে প্রায় ৪০ লাখ টাকা। তবে গত বছর এই অঙ্ক ছিল প্রায় ৭০ লাখ। এবার খরচ হয়েছে প্রায় ১৮ লাখ টাকা, ফলে প্রতিজনের ভাগে আসবে গড়ে ৪০–৪৫ হাজার টাকা। তিনি বলেন, “আমাদের ২১ জন যেন এক পরিবারের মতো। তাই আনন্দ ভাগাভাগি করতে ট্রলার সাজিয়েছি।”
উৎসবের আবহ
চেয়ারম্যান ঘাটে ট্রলার ভিড়তেই হাজারো মানুষ ভিড় করে এই রঙিন দৃশ্য দেখতে। আড়ৎদার মাহবুবুল আলম ইউসুফ বলেন, একসময় দীর্ঘ সমুদ্রযাত্রা শেষে নৌকা সাজিয়ে ঘরে ফেরার প্রচলন ছিল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা হারিয়ে গেলেও এবার এমভি আহাদ-২ ট্রলার সেই ঐতিহ্য আবার ফিরিয়ে এনেছে।
ব্যবসায়ী মো. আকবর হোসেন জানান, জেলেদের ফেরা এখন যেন বিদায়ের উৎসব। এরপর তারা কয়েকদিন বিশ্রামে থাকলেও অচিরেই শুরু হয়ে যাবে জাল মেরামত, সংসারের কাজ আর বিয়েশাদির আয়োজন।
নিষেধাজ্ঞা শুরু
সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ৩ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন ইলিশ ধরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন বলেন, “মা ইলিশ রক্ষায় কঠোর নজরদারি থাকবে। মৎস্য বিভাগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যৌথভাবে অভিযান চালাবে। নিষেধাজ্ঞা সফল হলে পরবর্তীতে প্রচুর মাছ পাওয়া যাবে।” পুরো সংবাদটির সারমর্ম হলো— **মাছ ধরা শেষে জেলেদের ঘরে ফেরা এখন শুধু অর্থনৈতিক অর্জন নয়, বরং এক সামাজিক উৎসব ও ঐতিহ্যে রূপ নিয়েছে।
m¤úv`K I cÖKvkK: G †K Gg gvndzRyi ingvb
cÖavb m¤úv`K: †gvt RvwKi
†nv‡mb
†hvMv‡hvM: 198 wm-eøK, iv‡qievM,
K`gZjx, XvKv- 1362|
†gvevBj: 01612346119,B‡gBj: dhaka24news.top@gmail.com
I‡qemvBU: dhaka24news.top, †dmeyK: https://www.facebook.com/DHAKA24NEWS.TOP/