প্রিন্ট এর তারিখঃ অক্টোবর ২০, ২০২৫, ৭:২৩ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ অক্টোবর ৩, ২০২৫, ৯:০১ পি.এম
গাজাগামী নৌবহরে ইসরায়েলি বাধা: ইউরোপসহ বিশ্বজুড়ে বিক্ষোভ, অবরোধ ও ভাঙচুর
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ত্রাণ নিয়ে গাজা অভিমুখী গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা আটক এবং শত শত অংশগ্রহণকারীকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় ইউরোপজুড়ে উত্তাল বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। বিভিন্ন দেশে সড়ক অবরোধ, দোকানপাট ভাঙচুর, বিশ্ববিদ্যালয় দখল, সাধারণ ধর্মঘট এবং মানববন্ধনের মধ্য দিয়ে প্রতিবাদ জানান বিক্ষোভকারীরা। ইউরোপের শহরজুড়ে বিক্ষোভ বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় বিক্ষোভকারীরা সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানান এবং ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানের নিন্দা করেন।
স্পেনের বার্সেলোনাতে বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন দোকান ও রেস্তোরাঁয় ভাঙচুর চালান এবং দেয়ালে ইসরায়েলবিরোধী স্লোগান লিখে দেন।
ইতালির মিলান, রোম, বলোনিয়া ও তুরিনে বিশ্ববিদ্যালয় দখল, রাস্তায় টায়ার ফেলে অবরোধ এবং সড়কজুড়ে মানববন্ধন হয়।
রোমে স্বাস্থ্যকর্মীরা (চিকিৎসক, নার্স, ফার্মাসিস্ট) ফ্ল্যাশ মব আয়োজন করেন। হাতে টর্চলাইট ও মোবাইলের আলো জ্বেলে তারা গাজায় নিহত ১,৬৭৭ জন স্বাস্থ্যকর্মীর নাম পড়ে শোনান।
ইতালির ট্রেড ইউনিয়নগুলো গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার সমর্থনে সারাদেশে সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। যদিও এসব আন্দোলনকে সমালোচনা করেছেন ইতালির প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি। ইউরোপ ছাড়িয়ে বিশ্বজুড়ে প্রতিবাদ
আয়ারল্যান্ডের ডাবলিন, ফ্রান্সের প্যারিস, জার্মানির বার্লিন এবং সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় হাজারো মানুষ সড়কে নেমে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
ইউরোপের বাইরেও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে— আর্জেন্টিনার বুয়েনস আয়ার্স, মেক্সিকোর মেক্সিকো সিটি এবং পাকিস্তানের করাচিতে ইসরায়েলবিরোধী আন্দোলন অনুষ্ঠিত হয়।
তুরস্কের ইস্তাম্বুলে ইসরায়েলি দূতাবাসের সামনে প্ল্যাকার্ড হাতে সাধারণ মানুষ বিক্ষোভ করেন। তাদের স্লোগান ছিল— “ইসরায়েল গাজাকে নয়, মানবতাকেই হত্যা করছে। নীরব থেকো না, উঠে দাঁড়াও।”
ইসরায়েলি অভিযানে ব্যাপক আটক
বুধবার (১ অক্টোবর) থেকে ইসরায়েলি বাহিনী গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার ৪৪টি নৌযানের মধ্যে ৪৩টি আটক করে। প্রায় ৫০০ কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের মধ্যে আছেন—
জলবায়ু আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ
বার্সেলোনার সাবেক মেয়র আডা কোলাউ
ইউরোপীয় সংসদ সদস্য রিমা হাসান
পাকিস্তান জামায়াত-ই-ইসলামীর সাবেক সিনেটর মুস্তাক আহমদ খান আটককৃতদের ইসরায়েলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং সেখান থেকে তাদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে ইসরায়েল। প্রেক্ষাপট গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা মূলত আন্তর্জাতিক ত্রাণবাহী নৌবহর, যার উদ্দেশ্য ছিল অবরুদ্ধ গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া। কিন্তু ইসরায়েলি বাহিনীর বাধা এবং গ্রেপ্তারের ঘটনায় শুধু ইউরোপ নয়, বিশ্বজুড়েই নতুন করে ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটেছে। সারমর্ম: গাজামুখী ত্রাণবাহী নৌবহরে ইসরায়েলের বাধা ইউরোপের রাজপথ থেকে লাতিন আমেরিকা ও এশিয়া পর্যন্ত এক বৈশ্বিক প্রতিবাদের জন্ম দিয়েছে। সড়ক অবরোধ, ভাঙচুর, মানববন্ধন ও ধর্মঘট এখন এক নতুন আন্তর্জাতিক সংহতির রূপ নিয়েছে।গাজাগামী নৌবহরে ইসরায়েলি বাধা: ইউরোপসহ বিশ্বজুড়ে বিক্ষোভ, অবরোধ ও ভাঙচুর