৪ বছরে বেক্সিমকোর ১৭টি প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করে ৯৭ মিলিয়ন ডলার পাচার: রণতরী হস্তান্তর শেষ, জড়িত সালমান এফ রহমান সহ ২৮ ব্যক্তি ও ১৮ প্রতিষ্ঠান

নিজস্ব প্রতিবেদক

৪ বছরের মধ্যে ট্রেড বেইজড মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে বেক্সিমকোর ১৭টি কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করে ৯৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশে পাচারের ঘটনা তদন্তে নিশ্চিত করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। ২০২০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে এই অর্থ পাচারে জড়িত ছিলেন বেক্সিমকো গ্রুপের চেয়ারম্যান এএসএফ রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান, আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান ও আহমেদ শাহরিয়ার রহমানসহ মোট ২৮ জন ব্যক্তি। এছাড়া, ১৯টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রাথমিক তদন্তে বিদেশে অর্থ পাচারের সত্যতা পাওয়া গেছে।

“বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ” 01612346119

সিআইডি জানায়, রপ্তানির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ দুবাইয়ের আর আর গ্লোবাল ট্রেডিং-এর মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, আয়ারল্যান্ডসহ অন্যান্য দেশে স্থানান্তরিত হত। আরআর গ্লোবাল ট্রেডিং-এর মালিকানা রয়েছে সালমান এফ রহমানের ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান ও এএসএফ রহমানের ছেলে আহমেদ শাহরিয়ার রহমানের নামে।

তদন্তে উঠে এসেছে, এসব প্রতিষ্ঠান জনতা ব্যাংক পিএলসি, মতিঝিল শাখার মাধ্যমে এলসি বা বিক্রয় চুক্তি করেছিল, কিন্তু রপ্তানির বিপরীতে অর্জিত অর্থ দেশে ফেরত আনা হয়নি। সিআইডি অনুসারে, ২০২০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে প্রায় ১২শ কোটি টাকা রপ্তানি দেখানো হলেও অর্থ দেশে ফেরেনি।

রোববার (৯ নভেম্বর) বিকেল ৪টায় মালিবাগে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত আইজিপি মো. ছিবগাত উল্লাহ জানান, এই ঘটনায় সালমান এফ রহমানসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে ১৭টি মানি লন্ডারিং মামলা তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিলের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন সম্পদ ক্রোক করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে দোহারের জমি ও স্থাপনা, গুলশানের দুটি ফ্ল্যাটসহ অন্যান্য সম্পত্তি। মোট ক্রোককৃত সম্পত্তির আনুমানিক মূল্য ৬০০–৭০০ কোটি টাকা।

ছিবগাত উল্লাহ আরও বলেন, সিআইডি ধারাবাহিকভাবে বিদেশে অর্থপাচারের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত করার ঘটনায় তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে এবং লন্ডার করা অর্থ দেশে ফেরানোর চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, আইনের শাসন কার্যকর থাকলে এই ধরনের অপরাধ বন্ধ হবে এবং কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম ইউনিটের প্রধান অ্যাডিশনাল ডিআইজি আলী আকবর খান, ফিনান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান অ্যাডিশনাল ডিআইজি রায়হান উদ্দিন খান এবং মিডিয়া সংক্রান্ত বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *