রংপুরের কৃষকদের সরকারের কাছে আরও বেশি আমন ধান কেনার আহ্বান

জেলা প্রতিবেদক

রংপুরে কৃষকদের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করার দাবিতে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর ও কৃষক সংগঠনের নেতারা প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন। রংপুরের কাচারী বাজারে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে তারা সরকারের কাছ থেকে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনার পরিমাণ বাড়ানোর আহ্বান জানান। চলতি আমন মৌসুমে সরকার ৫০ হাজার টন ধান, ৬ লাখ টন সেদ্ধ চাল এবং ৫০ হাজার টন আতপ চাল কেনার ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু কৃষক নেতারা বলেন, ৬ লাখ টন চালের তুলনায় মাত্র ৫০ হাজার টন ধান কেনা খুবই কম। তাদের মতে, কৃষকরা মূলত ধান উৎপাদন করেন, চাল নয়, তাই সরকারের উচিত সরাসরি ধান কেনাকে অগ্রাধিকার দেওয়া।

“বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ” 01612346119

সমাবেশে বক্তারা প্রতিটি উপজেলার বাজারে ধান সংগ্রহ কেন্দ্র স্থাপন এবং চালের তুলনায় দ্বিগুণ পরিমাণ ধান কেনার দাবি জানান। তারা উল্লেখ করেন, সরকার ২০ নভেম্বর থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রতি কেজি ধান ৩৪ টাকা এবং চাল ৫০ টাকা দরে কেনার পরিকল্পনা করেছে। কৃষক নেতারা আরও বলেন, আলু চাষিদের ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা এবং সহজ শর্তে ঋণ প্রদানের পাশাপাশি রংপুর অঞ্চলে বিশেষায়িত সরকারি কোল্ড স্টোরেজ নির্মাণ করা অত্যন্ত জরুরি, যাতে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত আলু সংরক্ষণ করতে পারেন এবং অপ্রয়োজনীয় ক্ষতির সম্মুখীন না হন।

সংগঠনটির জেলা আহ্বায়ক কমরেড আনোয়ার হোসেন বাবলু সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন। সমাবেশে কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক কমরেড আহসানুল আরেফিন টিটু, কৃষক প্রতিনিধি রানা মিয়া ও আবুল হোসেন বক্তব্য রাখেন। আহসানুল আরেফিন টিটু বলেন, সরকারের ঘোষিত ধান ক্রয় পরিমাণ কৃষকদের অধিকারকে উপেক্ষা করছে। ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে এবং বাজারে চালের দাম স্থিতিশীল রাখতে সময়মতো বোরো ও আমন ধান সংগ্রহ নীতি প্রণয়ন করা জরুরি। তিনি প্রস্তাব দেন, সরকার যেন কৃষকদের কাছ থেকে আরও বেশি ধান কিনে এবং তা সংগ্রহকৃত হারে মিলারদের মাধ্যমে ভাঙিয়ে বাজারে ভর্তুকি মূল্যে চাল সরবরাহ করা হয়। এতে বাজার সিন্ডিকেট ভাঙবে এবং সাধারণ ভোক্তারা সুরক্ষিত থাকবেন।

অন্যদিকে, জেলা আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন বাবলু আলু চাষিদের দুর্দশার কথাও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, গত বছর কোল্ড স্টোরেজ মালিকরা ভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছিলেন, যার ফলে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত আলু সংরক্ষণ করতে পারেননি এবং শত শত টন আলু নষ্ট হয়ে গেছে। সমাবেশ শেষে সংগঠনটি তাদের দাবিসমূহ বিস্তারিতভাবে তুলে ধরে জেলা প্রশাসক এবং আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে একটি স্মারকলিপি জমা দেয়। এই প্রতিবাদে কৃষক নেতারা আশা প্রকাশ করেন যে সরকার তাদের দাবি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে এবং কৃষকদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *