সেপ্টেম্বর থেকে ফোরজির ন্যূনতম গতি ১০ এমবিপিএস বাধ্যতামূলকভাবে কার্যকর হবে

বিশেষ প্রতিবেদক

নতুন কোয়ালিটি অব সার্ভিস (কিউওএস) নীতিমালায় ফোরজি ইন্টারনেটের ন্যূনতম গতি ১০ এমবিপিএস ঠিক করা হয়েছে। সেবার মান নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এখন থেকে প্রতি মাসে আগের মাসের নেটওয়ার্ক পারফরম্যান্স পর্যালোচনা করবে এবং সেপ্টেম্বরের শুরু থেকেই এই প্রক্রিয়া চালু হবে। রবিবার (৩১ আগস্ট) প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব তার ফেসবুকে দেওয়া একটি পোস্টে এ তথ্য প্রকাশ করেন।

“বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ” 01612346119

দেশের টেলিযোগাযোগ সেবার মান দীর্ঘদিন ধরে সন্তোষজনক না হওয়ায় বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে নতুন কিউওএস বেঞ্চমার্ক তৈরি করা হয়। গত সপ্তাহে বিটিআরসির কমিশন সভায় মোবাইল অপারেটর, এনটিটিএন এবং আইএসপি প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য এই নীতিমালা অনুমোদন পায়।

ফয়েজ তৈয়্যব লিখেছেন, বাংলাদেশে এ ধরনের নীতিমালা প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করা হচ্ছে। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে কিউওএস সেবা মান নির্ধারণের একটি প্রচলিত পদ্ধতি। এতে ড্রাইভ টেস্টে ফোরজি সেবার সর্বনিম্ন ডাউনলোড গতি ১০ এমবিপিএস রাখা হয়েছে। কলড্রপের সীমা কমানো হয়েছে এবং বিভিন্ন মানদণ্ড আরও কঠোর করা হয়েছে। অপারেটরদের প্রতি মাসে বাধ্যতামূলকভাবে এসব সূচকের রিপোর্ট দিতে হবে।

তিনি উল্লেখ করেন, মোবাইল অপারেটররা ফোরজি নেটওয়ার্কে পর্যাপ্ত বিনিয়োগ না করায় সেবার মান নিম্নমুখী হয়েছে। নতুন লাইসেন্স পলিসিতেও মানসম্পন্ন সেবা ও লাইসেন্স শর্ত কঠোর করার কথা বলা আছে। তার মতে, নতুন কিউওএস বেঞ্চমার্ক গ্রাহকের সেবার মান উন্নয়নে এবং সেবাদাতাদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে ভূমিকা রাখবে।

সংশোধিত নীতিমালায় নেটওয়ার্ক পর্যায়ে কল সেটআপ সাফল্যের হার ৯৯% এবং জেলা-উপজেলায় ৯৮% নির্ধারণ করা হয়েছে।

  • টুজি নেটওয়ার্কে কলড্রপের সীমা ১% এবং উপজেলা পর্যায়ে ১.৫% ধরা হয়েছে।
  • ফোরজি ডেটা অ্যাটাচ সাফল্যের হার নেটওয়ার্ক পর্যায়ে ৯৯% এবং জেলা পর্যায়ে ৯৮.৫% থাকতে হবে।
  • গড় ডাউনলোড স্পিড নেটওয়ার্ক পর্যায়ে ৩.৫ এমবিপিএস এবং জেলা পর্যায়ে ২.৫ এমবিপিএস থাকতে হবে।
  • ড্রাইভ টেস্টে ভয়েস কল সেটআপ সাফল্য ৯৮%, কলড্রপ ২% এবং ভোল্টির গড় মান সূচক কমপক্ষে ৩.৫ হতে হবে।
  • ডেটা সেবায় অন্তত ১০ এমবিপিএস ডাউনলোড ও ২ এমবিপিএস আপলোড গতি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

সেবার মান তদারকিতে এখন থেকে অপারেটরদের মাসিক নেটওয়ার্ক সূচক জমা দিতে হবে। এই সূচকগুলো তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে—অ্যাক্সেসিবিলিটি, রিটেইনেবিলিটি এবং নেটওয়ার্ক ইনটিগ্রিটি।

১. অ্যাক্সেসিবিলিটি অংশে দেখা হবে গ্রাহক নেটওয়ার্কে কত সহজে প্রবেশ করতে পারছেন এবং কল কত সফলভাবে সেটআপ হচ্ছে।
২. রিটেইনেবিলিটিতে মূল্যায়ন হবে চলমান কল বা ডেটা সেশন কতটা স্থিতিশীল থাকে।
৩. ইনটিগ্রিটিতে দেখা হবে নেটওয়ার্কের সামগ্রিক দক্ষতা ও সক্ষমতা।

বিটিআরসি মাসিক ভিত্তিতে জেলা, উপজেলা ও নেটওয়ার্ক পর্যায়ের গড় ফলাফল সংগ্রহ করবে। পাশাপাশি সবচেয়ে দুর্বল ৫০টি সেলের তালিকাও জমা দিতে হবে।

ফয়েজ তৈয়্যব জানান, বাধ্যতামূলক মাসিক রিপোর্টিং অপারেটরদের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করবে এবং দুর্বল এলাকার সেবার মান দ্রুত চিহ্নিত ও সমাধানে সাহায্য করবে।

ফিক্সড ইন্টারনেট, টেলিফোনি এবং এনটিটিএনদের জন্যও নতুন নীতিমালা করা হয়েছে। স্থির টেলিফোন সেবায় কলড্রপ ১%–এর মধ্যে রাখতে হবে, কল সেটআপ সাফল্য ৯৯% ছুঁতে হবে এবং কল সংযোগ ৬ সেকেন্ডের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে।

ফিক্সড ইন্টারনেটে স্থানীয় ট্রাফিক ল্যাটেন্সি সর্বোচ্চ ২৫ এমএস, ডেটা লস ১%–এর মধ্যে এবং নেটওয়ার্ক অ্যাভেলেবিলিটি অন্তত ৯৯% হতে হবে। ব্যবহারকারীর প্রান্তে ডাউনলোড-আপলোড স্পিড সাবস্ক্রাইব করা গতির কমপক্ষে ৯৫% নিশ্চিত করতে হবে।

এনটিটিএনদের জন্য ডেটা লস সর্বোচ্চ ০.০১%, ল্যাটেন্সি ৫ এমএস এবং জিটার ৩ এমএস সীমার মধ্যে রাখতে হবে। ফাইবার নেটওয়ার্কে সেবা বিঘ্ন হলে শহরে ৪ ঘণ্টা এবং গ্রামে ৬ ঘণ্টার মধ্যে সমাধান করতে হবে।

তিনি আরও জানান, গ্রাহক অভিযোগ সমাধানের জন্য কঠোর সময়সীমা নির্ধারণ করেছে বিটিআরসি। নেটওয়ার্ক-সম্পর্কিত নয় এমন অভিযোগ ২৮ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে। গ্রাহকসেবা কেন্দ্রে আসা ৯০% কল ৪০ সেকেন্ডে এবং সব কল ৯০ সেকেন্ডে রিসিভ করতে হবে।

আপনি চাইলে আমি এটি ২০০, ৩০০, ৪০০ বা অন্য যেকোনো শব্দসংখ্যায় সংক্ষেপিত সংস্করণও তৈরি করে দিতে পারি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *