নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা ডা. বিধান চন্দ্র রায় পোদ্দার জানিয়েছেন, প্রাথমিক শিক্ষকদের গ্রেডেশন বিষয়টি সরকার সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে। মঙ্গলবার সচিবালয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই তথ্য দেন।
তিনি বলেন, ইতিমধ্যে সারা দেশে প্রায় ৬৫ হাজার প্রধান শিক্ষককে দশম গ্রেডে উন্নীত করা হয়েছে। সহকারী শিক্ষকদের গ্রেডেশন দেওয়ার বিষয়েও সরকার আন্তরিক, এবং এ নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে নয়টি সংগঠনের সঙ্গে চূড়ান্ত আলোচনা হয়েছে। সবাই সরকারের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে বলে জানান তিনি। উপদেষ্টা পরিষ্কারভাবে বলেন, গ্রেডেশন পাওয়ার জন্য কোনো শিক্ষককে আন্দোলন করতে হবে না।
তিনি আরও বলেন, জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি (নেপ)-এর তত্ত্বাবধানে ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে ‘ডিপ্লোমা ইন প্রাইমারি এডুকেশন (ডিপিএড)’ প্রোগ্রাম চালু হচ্ছে। দেশের ১২টি প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে (পিটিআই) পাইলট হিসেবে এই প্রোগ্রাম পরিচালিত হবে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, রংপুর, সিলেট, বরিশাল, ময়মনসিংহ, যশোর, কুমিল্লা, জয়দেবপুর, দিনাজপুর ও বগুড়া। প্রোগ্রামটি ১০ মাস মেয়াদি, অনাবাসিক ও বৈকালিক।
উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশের যেকোনো স্থায়ী নাগরিক আবেদন করতে পারবেন। স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ন্যূনতম দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের জিপিএসহ স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রিধারীরা আবেদন করতে পারবেন। তবে শিক্ষা জীবনের কোনো পর্যায়ে তৃতীয় বিভাগ বা সমমানের জিপিএ গ্রহণযোগ্য নয়। নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে আবেদনকারীরা ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেবেন। নেপের ডিপিএড বোর্ড ৫০ নম্বরের বহুনির্বাচনী ভর্তি পরীক্ষা নেবে, যাতে বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও সাধারণ জ্ঞান অন্তর্ভুক্ত থাকবে। উত্তীর্ণদের পিটিআইভিত্তিক মেধাতালিকার ভিত্তিতে ভর্তি করা হবে।
ডিপিএড প্রোগ্রামে মোট ৩৫ ক্রেডিটের ১২০০ নম্বরের মূল্যায়ন থাকবে, যা দুই সেমিস্টারে ১০ মাসে সম্পন্ন হবে। তাত্ত্বিক কোর্সের পাশাপাশি সিমুলেশন, বিদ্যালয়ভিত্তিক অনুশীলন ও প্রতিফলনমূলক চর্চার সুযোগ থাকবে। এতে শিক্ষা দর্শন, শিশুর বিকাশ, শিক্ষণ পদ্ধতি, শ্রেণি পরিচালনা, শিখন সামগ্রী প্রণয়ন, মূল্যায়ন কৌশল, ভাষা ও গণিত দক্ষতা উন্নয়ন, আইসিটি, নৈতিকতা ও স্বাস্থ্যশিক্ষাসহ বিভিন্ন বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
উপদেষ্টা বলেন, এই প্রোগ্রাম শিক্ষার্থীদের বহুমাত্রিক দক্ষতা উন্নত করবে। তারা আধুনিক শিক্ষাদর্শন, গবেষণা এবং বিশ্লেষণ ক্ষমতায় সমৃদ্ধ হয়ে দায়িত্বশীল শিক্ষক হিসেবে গড়ে উঠতে পারবেন। এটি শিক্ষকদের ক্যারিয়ার উন্নয়ন এবং দেশের শিক্ষার মান বৃদ্ধিতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

01612346119