
একজন প্রবাসী বুদ্ধিজীবীর প্রত্যাবর্তন ও নেতৃত্বের প্রত্যাশা
নিজস্ব প্রতিবেদক
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে ঝালকাঠি-১ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে ইঞ্জিনিয়ার এ কে এম রেজাউল করিম সবচেয়ে আলোচিত ও সম্ভাবনাময় মুখ হয়ে উঠেছেন। শুধু রাজনীতিক নন—তিনি একজন সাংবাদিক, গবেষক, সংগঠক, সমাজসেবক ও আইনজীবী। যুক্তরাজ্যপ্রবাসী এই বুদ্ধিজীবী দীর্ঘদিন ধরে দেশে ও প্রবাসে জাতীয়তাবাদী রাজনীতির বুদ্ধিবৃত্তিক নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন।

প্রবাস থেকে নীতিনির্ধারণের উত্তরণ:
২০০৭ সালের এক-এগারোর অগণতান্ত্রিক প্রেক্ষাপটে, যখন বাংলাদেশের রাজনীতি সেনাসমর্থিত সরকারের কড়ালগ্রাসে, তখন যুক্তরাজ্য থেকে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী গবেষণা কেন্দ্র । এর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার রেজাউল করিম প্রবাসেই একটি চিন্তাশীল প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী গবেষণা কেন্দ্র সে সময় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামনে বাংলাদেশের ভোটাধিকার হরণ ও গণতান্ত্রিক স্থবিরতা তুলে ধরে কার্যকর কূটনৈতিক চাপ তৈরি করতে সক্ষম হয়। পাশাপাশি, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, ও রাষ্ট্র সংস্কার বিষয়ে গবেষণালব্ধ প্রস্তাবনাও নীতিনির্ধারকদের কাছে একটি তথ্যনির্ভর ভিত্তি তৈরি করে।আজ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী গবেষণা কেন্দ্র একটি পূর্ণাঙ্গ থিঙ্ক ট্যাঙ্ক হিসেবে পরিণত হয়েছে, যা প্রবাসী তরুণদের জড়িত করে জাতীয়তাবাদী রাজনীতির জ্ঞানচর্চার একটি দৃঢ় প্ল্যাটফর্ম গড়ে তুলেছে।

রাজনীতি, গবেষণা ও সমাজসেবার সমন্বিত ভূমিকা: রেজাউল করিম ২০০১ সাল থেকেই ঝালকাঠি-১ এবং পিরোজপুর-২ আসনে সক্রিয়ভাবে রাজনৈতিক মাঠে ছিলেন এবং বিএনপির মনোনয়নের জন্য আবেদন করে আসছেন। তিনি ২০০১, ২০০৬, ২০০৮ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন।স্থানীয় পর্যায়ে তাঁর জনপ্রিয়তা গড়ে উঠেছে সামাজিক ও মানবিক কার্যক্রমের মাধ্যমে। মোসলেম আলী খান ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন এর মাধ্যমে হতদরিদ্র মানুষকে সহায়তা, মসজিদ-মাদ্রাসা ও পাঠাগার প্রতিষ্ঠা, কন্যা দায়গ্রস্ত পরিবারকে অনুদান, এবং কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপনার মধ্য দিয়ে তিনি একটি স্থায়ী মানবিক ভিত গড়ে তুলেছেন।
শিক্ষার প্রসার ও সাংগঠনিক নেতৃত্ব
তার প্রতিষ্ঠিত ও নেতৃত্বাধীন উল্লেখযোগ্য সংস্থাগুলোর মধ্যে রয়েছে:
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী গবেষণা কেন্দ্র
ডেমোক্রেসি রিসার্চ সেন্টার (DRC)
জীবনানন্দ দাশ গবেষণা কেন্দ্র
শের-ই-বাংলা এ কে ফজলুল হক রিসার্চ ইনস্টিটিউট
সাতুরিয়া ইঞ্জিনিয়ার এ কে এম রেজাউল করিম কারিগরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ
এছাড়া তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ইসলামিক শিক্ষা, কারিগরি দক্ষতা ও সাহিত্যচর্চার লক্ষ্যে একাধিক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছেন।
মিডিয়া ও আন্তর্জাতিক উপস্থিতি
ইঞ্জিনিয়ার রেজাউল করিম একজন নিয়মিত টকশো আলোচক এবং আন্তর্জাতিক মিডিয়াতেও পরিচিত মুখ। তিনি “জিয়াউর রহমানের বহুদলীয় চিন্তা,” “তারেক রহমানের ৩১ দফা,” “জুলাই বিপ্লব ও পরবর্তী রাজনীতি” সহ একাধিক গবেষণামূলক বইয়ের লেখক। তিনি জাতিসংঘ, হাউস অব কমন্স, বার্লিন কনফারেন্স সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের বিষয়ে বক্তব্য রেখেছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অভিমত
বিশ্লেষকদের মতে, ঝালকাঠি-১ আসনের জন্য এমন একজন প্রার্থী প্রয়োজন যিনি আন্তর্জাতিক পরিসরে পরিচিত, বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে দক্ষ এবং দীর্ঘদিন তৃণমূলে সক্রিয় থেকেছেন। এই দিক থেকে ইঞ্জিনিয়ার রেজাউল করিম অগ্রাধিকার পাওয়ার দাবিদার।
অন্যান্য মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে অনেকে সাম্প্রতিক সময়ে মাঠে সক্রিয় হলেও, রেজাউল করিম দীর্ঘ দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে নির্বাচনী মাঠে সক্রিয় থেকেছেন এবং বিএনপির ভাবমূর্তি পুনঃস্থাপনে অবিচল ভূমিকা রেখে চলেছেন।
ইঞ্জিনিয়ার এ কে এম রেজাউল করিমের প্রার্থীতা শুধু একজন রাজনীতিকের নয়, বরং একজন চিন্তাবিদ, সমাজসেবক ও নেতৃত্বদানের উপযুক্ত বুদ্ধিজীবীর প্রত্যাবর্তন। তার অভিজ্ঞতা, কৌশল, এবং কার্যকর সংগঠন পরিচালনার দক্ষতা ঝালকাঠি-১ আসনকে একটি নতুন দিকনির্দেশনা দিতে পারে—এমনটাই প্রত্যাশা স্থানীয় জনগণ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।