নয়নপুর সড়কের দশ বছর ধরে নেই সংস্কার

এনামুল হক আরিফ
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

দীর্ঘ এক দশকেরও বেশি সময় ধরে সংস্কার না হওয়ায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার পুনিয়াউট মোড় থেকে উলচাপাড়া ব্রিজ পর্যন্ত সড়কটি এখন চলাচলের অযোগ্য হয়ে উঠেছে। এর ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছে নয়নপুর, উলচাপাড়া, বিজেশ্বর, মোহাম্মদপুর ও রহিমপুর গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ।

স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, এ সড়কটি শহরের সঙ্গে সংযোগকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। পুনিয়াউট নয়নপুর চৌরাস্তা থেকে উলচাপাড়া ব্রিজ পর্যন্ত সড়কটি ব্যবহার করে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ শহরে যাতায়াত করেন। এটি না শুধুমাত্র স্থানীয়দের যাতায়াতের প্রধান পথ, বরং স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী, রোগী, কর্মজীবী মানুষ এবং ব্যবসায়ীদের জন্যও এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

তবে দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় সড়কের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে, উঠে গেছে পিচ ও ইট। অল্প বৃষ্টিতেই রাস্তা কাঁদায় পরিণত হয়, সৃষ্টি হয় পানি জমে চলাচলে প্রতিবন্ধকতা। রাস্তার এমন পরিস্থিতিতে অটো রিকশা, সিএনজি, মোটরসাইকেল, ভ্যান ও সাধারণ যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা, বাড়ছে যানজট।

স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, গত ১০-১২ বছর ধরে শুধু টেন্ডার হওয়ার খবর শোনা গেলেও বাস্তবে কোনো সংস্কার কাজ শুরু হয়নি। এর মধ্যে সময় টিভি, পথিক টিভি ও অন্যান্য গণমাধ্যমে একাধিকবার প্রতিবেদন প্রচার হলেও সরকার বা সড়ক ও জনপথ বিভাগ থেকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যায়নি।

রাস্তার এ অবনতি ও জনভোগান্তির জন্য স্থানীয়রা বেশ কয়েকটি কারণ তুলে ধরেছেন। এর মধ্যে রয়েছে:

  • অতিরিক্ত মালবোঝাই ট্রাক, বিশেষ করে বালু ও পাথর পরিবহনকারী ট্রাকের চলাচল
  • নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে বারবার সংস্কার
  • পানি নিষ্কাশনের সঠিক ব্যবস্থার অভাব
  • বরাদ্দকৃত বাজেট যথাযথভাবে ব্যয় না হওয়া
  • চালকদের অসচেতনতা

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাস্তার ধুলাবালির কারণে ঘরে ঘরে সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্টসহ নানা শারীরিক সমস্যা দেখা দিচ্ছে। স্কুল শিক্ষার্থী ও রোগীদের জন্য এই রাস্তা এখন যেন মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে।

তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে—
১. রাস্তার দ্রুত ও টেকসই সংস্কার
২. মালবাহী ভারী ট্রাক নিয়ন্ত্রণে আনা বা বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ
৩. পানি নিষ্কাশনের কার্যকর ব্যবস্থাপনা
৪. সঠিক তদারকির মাধ্যমে উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন

সবশেষে, স্থানীয় বাসিন্দারা সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর বিশেষ করে সড়ক ও জনপথ বিভাগের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন, যেন অবিলম্বে এই গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা সংস্কার করে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ লাঘব করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

নামযের সময়সূচি