
নিজস্ব প্রতিবেদক
চট্টগ্রাম বন্দর—দেশের অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি। আর এই কেন্দ্রবিন্দুতে প্রায় দুই দশক ধরে একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখে গেছেন একজন কর্মকর্তা—পরিবহন বিভাগের পরিচালক এনামুল করিম। বন্দরজুড়ে একটি অপ্রকাশিত ‘সাম্রাজ্য’ গড়ে তুলে নিয়োগ বাণিজ্য থেকে কনটেইনার ছাড়, এমনকি লাইসেন্স অনুমোদন—সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করেছেন তিনি। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত শুরু করেছে।

রাজনৈতিক পরিচয়ের রূপ বদল, প্রভাবের নয়
১৯৯৬ সালে তৎকালীন নৌপরিবহনমন্ত্রী আ স ম আবদুর রবের মাতার ব্যক্তিগত সুপারিশে চাকরিজীবনের সূচনা এনামুল করিমের। এরপর থেকে বদলেছে সরকারের রঙ, পাল্টেছে তাঁর রাজনৈতিক পরিচয়ও—কখনও আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের ঘনিষ্ঠ হিসেবে, আবার কখনও বিএনপি-জামায়াতপন্থী পরিচয়ে। কিন্তু বদলায়নি তার প্রভাব-প্রতিপত্তি।
নিয়োগ বাণিজ্যে কোটি টাকার কারসাজি
বন্দরের শ্রমিক-কর্মচারী নিয়োগের পেছনে কাজ করে একটি প্রভাবশালী চক্র, যার মূল হোতা এনামুল করিম। অভিযোগ রয়েছে, প্রতিটি নিয়োগে ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা ঘুষ আদায় করা হয়। এই ‘নিয়োগ বাণিজ্য’ পরিচালনায় তাকে সহায়তা করেন বন্দর শ্রমিক কর্মচারী লীগ (রেজি: ২৭৪৭)-এর সভাপতি মীর নওশাদ, সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীর ও সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল।
কনটেইনার ছাড়ে অনিয়ম, ১০ কোটিরও বেশি ক্ষতি বন্দরের
২০১৫-১৬ অর্থবছরে বড় ধরনের অনিয়ম ঘটে চট্টগ্রাম বন্দরে। শিপিং এজেন্ট মেসার্স ইউনিবেঙ্গল কনটেইনার ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের রিভলভিং অ্যাকাউন্টে পর্যাপ্ত অর্থ না থাকা সত্ত্বেও তাদের কনটেইনার ছাড়পত্র দেন ডেপুটি ট্রাফিক ম্যানেজার (অপারেশন) এনামুল করিম। ফলে বন্দর কর্তৃপক্ষ প্রায় ১০ কোটি ৩২ লাখ টাকার বেশি রাজস্ব হারায়। পরে আদালতের দ্বারস্থ হলেও প্রতিষ্ঠানটি দেউলিয়া হয়ে পড়ে, আর ১,৬০০ কনটেইনার আটকে থাকা সত্ত্বেও বকেয়া আদায় করতে ব্যর্থ হয় বন্দর কর্তৃপক্ষ।
দুদকের অনুসন্ধানে এনামুল করিম ও তার সম্পদ
চাঞ্চল্যকর এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়কালে চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যানের কাছে একাধিকবার চিঠি দিয়ে প্রয়োজনীয় নথিপত্র চাওয়া হয়েছে।দুদকের চিঠিতে বলা হয়েছে, এনামুল করিম শিপিং এজেন্টদের সঙ্গে যোগসাজশ করে বন্দরের রাজস্ব আত্মসাৎ করেছেন এবং তার নামে ও পরিবারের নামে অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন।

২০১৪ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নাম, পদবি, দায়িত্বের বিবরণ এবং আইনি পদক্ষেপ সংক্রান্ত রেকর্ডপত্র চাওয়া হয়েছে।সর্বশেষ দেড় মাস আগে তদন্ত আরও জোরদার করতে চিঠি দিয়েছেন অনুসন্ধান কর্মকর্তা মো. এমরান হোসেন, সহকারী পরিচালক, দুদক চট্টগ্রাম জেলা সমন্বিত কার্যালয়-১।
https://shorturl.fm/eQETL
https://shorturl.fm/VEaQI
https://shorturl.fm/rnzha
3tdar0
https://shorturl.fm/RKpjC
https://shorturl.fm/bNpkr
https://shorturl.fm/vYD1o
https://shorturl.fm/L3954