খাদ্যসংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রক্ষায় গুরুত্ব দিলেন উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান

নিজস্ব প্রতিবেদক

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, দেশের খাদ্যসংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং প্রথাগত উৎপাদন ব্যবস্থাকে রক্ষা করা সময়ের দাবি। তিনি জানান, বৈচিত্র্যই একটি দেশের শক্তি, আর যত বেশি বৈচিত্র্য বজায় থাকে, দেশ তত উন্নত ও সুন্দর হয়ে ওঠে। তাই স্থানীয় খাদ্যাভ্যাস, ঐতিহ্যবাহী কৃষিপদ্ধতি এবং পাহাড়ি অঞ্চলের প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ করা অত্যন্ত জরুরি। পলিথিন শপিং ব্যাগ নিয়ে তিনি কঠোর অবস্থান নেন এবং বলেন, পরিবেশ রক্ষায় এ ক্ষতিকর উপাদান অবশ্যই বন্ধ করতে হবে।

শুক্রবার সকালে রাজধানীর মীরপুর পার্বত্য বৌদ্ধসংঘ কমপ্লেক্সে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি তুলে ধরেন, জনবল সীমিত থাকা সত্ত্বেও পরিবেশ মন্ত্রণালয় অবৈধ ইটভাটা নিয়ন্ত্রণে ধারাবাহিকভাবে অভিযান পরিচালনা করছে। বান্দরবান, রাঙামাটি এবং খাগড়াছড়ি এলাকার ইটভাটাগুলোতে অভিযানের সময় বাধা, সড়ক অবরোধ ও হামলার মতো পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়েছে কর্মকর্তাদের। এসব চ্যালেঞ্জের মধ্যেও রাষ্ট্র এখন পরিবেশ ধ্বংসের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, যা একটি ইতিবাচক দিক বলে তিনি উল্লেখ করেন।

“বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ” 01612346119

পাহাড় কাটা, ঝাউবাগান ধ্বংস এবং প্রাকৃতিক বন উজাড়কে তিনি দেশের জন্য বড় ঝুঁকি হিসেবে চিহ্নিত করেন। তার মতে, এসব ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম কোনোভাবেই ঐতিহ্য বা সংস্কৃতি সংরক্ষণের পথ হতে পারে না, বরং পরিবেশগত ভারসাম্য নষ্ট করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বিপদের মুখে ফেলছে। কৃষকদের স্বার্থ বিবেচনায় বিভাগীয় পর্যায়ে বিপণন কেন্দ্র স্থাপনের প্রয়োজনীয়তার কথাও তিনি জোর দিয়ে বলেন। এতে কৃষকরা ন্যায্য মূল্য পাবেন এবং স্থানীয় উৎপাদনের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়বে।

তিনি আরও জানান, পরিবেশ, সংস্কৃতি ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে এই উদ্যোগগুলো বাস্তবায়নে যদি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা প্রয়োজন হয়, তবে তিনি যথাযথভাবে সুপারিশ করবেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস এবং পার্বত্য বৌদ্ধ সংঘের আহ্বায়ক মেজর (অব.) তপন বিকাশ চাকমা। সভাপতিত্ব করেন নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন।

অনুষ্ঠান শেষে তিনি মেলার বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন এবং অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এসময় ভূমিকম্প অনুভূত হলে সাংবাদিকরা তার মতামত জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুতি বাড়ানো প্রয়োজন। পাহাড় ও জলাশয় রক্ষা করা গেলে প্রকৃতির ক্ষয় কমে যাবে এবং দুর্যোগের ঝুঁকি অনেকটাই হ্রাস পাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *