তরুণরা সবসময়ই ন্যায়বিচার ও গণতন্ত্রের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে: আইন উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক

জুলাই মাসে দেশের তরুণদের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত গণঅভ্যুত্থানে তাদের বীরত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রশংসা করে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, দেশের ন্যায়বিচার ও গণতন্ত্রের আন্দোলন যখনই শুরু হয়েছে, তখনই তরুণ সমাজ সামনের সারিতে থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। শুক্রবার সকালে রাজধানীর ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ষষ্ঠ জেসাপ (জ্যুরিডিক্যাল অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব প্যাংগল্যান্ড) কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের আবাসিক আইন উপদেষ্টা সেরা সেথলিকাই, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. ডেভ ডাওল্যান্ড, স্কুল অব ল-এর সহকারী অধ্যাপক মো. মোস্তফা হোসেন, আইএলএসএ (আন্তর্জাতিক আইন ছাত্র সমিতি) এর জাতীয় সমন্বয়কারী নূরান চৌধুরী, হার্থ বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক পরব নাসের সিদ্দিক, এবং জেসাপ বাংলাদেশের জাতীয় প্রশাসক মাইমুনা সৈয়দ আহমেদ। এসব বিশিষ্ট ব্যক্তির উপস্থিতিতে এ কর্মশালার উদ্বোধন হয়।

“বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ” 01612346119

ড. আসিফ নজরুল বলেন, মহান জুলাই অভ্যুত্থানে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা যে বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে, তা গর্বের সঙ্গে স্মরণ করছি। তিনি উল্লেখ করেন, এটি নতুন কিছু নয়; তরুণ সমাজ সবসময় দেশের ন্যায়বিচার ও গণতন্ত্রের আন্দোলনের অগ্রভাগে রয়েছে। তরুণদের এই ভূমিকা শুধু আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া নয়, বরং তারা আদালত কক্ষে এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চে ন্যায়বিচারের পক্ষে ওকালতি করতে সক্ষম—এমন প্রমাণ ও তাদের সক্ষমতা এই অনুষ্ঠানে স্পষ্ট হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এই বছর ৫২টি বিশ্ববিদ্যালয় এই কর্মশালায় অংশগ্রহণ করছে, যা জাতীয়ভাবে দেশের তরুণদের মধ্যে আন্তর্জাতিক আইন ও বিতর্কের প্রতি আবেগ ও আগ্রহের প্রমাণ। ড. আসিফ নজরুল উল্লেখ করেন, জেসাপ বাংলাদেশ এখন বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম জেসাপ যোগ্যতা অর্জনকারী প্রতিযোগিতা, যা আমাদের শিক্ষার্থী, কোচ, এবং আয়োজকদের কঠোর পরিশ্রমের ফল। এই অর্জন আমাদের শিক্ষার্থীদের দক্ষতা, গবেষণার গভীরতা, স্পষ্ট লেখা, প্ররোচনামূলক অ্যাডভোকেসি, এবং দলবদ্ধ কাজের মান উন্নত করেছে।

তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, এই কর্মশালার মাধ্যমে তরুণদের দক্ষতা আরও তীক্ষ্ণ হবে এবং তারা ন্যায়বিচার ও আইনের শাসনের প্রতি আরও অঙ্গীকারবদ্ধ হবে। ‘মে ইট প্লিজ দ্য কোর্ট: দ্য কেস কনসার্নিং দ্য ক্রাফট অফ জেসাপ অ্যাডভোকেসি’ শীর্ষক এই দুদিনব্যাপী কর্মশালাটি অ্যাডভোকেসি দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ফিলিপ সি জেসাপ আন্তর্জাতিক আইন মুট কোর্ট প্রতিযোগিতার (জেসাপ) ১০ম বাংলাদেশ যোগ্যতা অর্জনের প্রস্তুতিও নিশ্চিত করবে বলে প্রত্যাশা প্রকাশ করেন তিনি।

এটি মূলত একটি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা যা ‘বিশ্বকাপ’ হিসেবে পরিচিত। এই আয়োজনের মাধ্যমে তরুণ শিক্ষার্থীরা গবেষণা, বিশ্লেষণ, উপস্থাপনা ও দলবদ্ধ কাজের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মানের আইনজ্ঞান অর্জন করবে। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়, আইএলএসএ, মার্কিন বিচার বিভাগ, বিদেশি প্রসিকিউটরিয়াল ডেভেলপমেন্ট, এবং হার্থ বাংলাদেশ এই কর্মশালার আয়োজন করে। এর উদ্দেশ্য, তরুণদের মধ্যে অ্যাডভোকেসি ও আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি আগ্রহ জাগানো, পাশাপাশি ভবিষ্যতের আন্তর্জাতিক আইনজীবী ও কূটনীতিক তৈরিতে সহায়তা করা।

সংক্ষেপে, এই কর্মশালা তরুণদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করছে, যেখানে তারা তাদের গবেষণা, বিতর্ক ও আইনি দক্ষতা বাড়ানোর পাশাপাশি দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে তাদের ভূমিকা আরও দৃঢ় করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এটি দেশের ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তুতির অংশ, যা দেশের উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের জন্য এক বিশাল সম্পদ হিসেবে বিবেচিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *