জাদুঘর রক্ষায় ৭ হাজার জিও ব্যাগ পাউবোর

ফাহিম আহমেদ

বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের রহিমগঞ্জ গ্রামে অবস্থিত বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর স্মৃতি জাদুঘর ও গ্রন্থাগারকে নদীভাঙনের হাত থেকে রক্ষায় জরুরি ভিত্তিতে কাজ শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
প্রাথমিক পর্যায়ে সন্ধ্যা নদীর ভাঙনপ্রবণ অংশে ৭ হাজার বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। এই কার্যক্রমে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৩০ লাখ টাকা।

অস্থায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছে পাউবো

পাউবোর বরিশাল কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ভাঙনপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করে সেখানে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে অস্থায়ীভাবে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, এটি একটি প্রাথমিক পদক্ষেপ, পরিস্থিতি বুঝে পরবর্তীতে আরও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

স্থানীয়দের শঙ্কা ও ক্ষোভ

তবে স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, শুধুমাত্র ৭ হাজার জিও ব্যাগ ফেলা এবং ৭০ মিটার এলাকায় কাজ করেই পুরো গ্রাম বা জাদুঘর রক্ষা সম্ভব নয়। তারা অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন ধরে বীরশ্রেষ্ঠ মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের নামে নির্মিত এই জাদুঘর ও গ্রন্থাগারটি সরকারি অবহেলার শিকার। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এটি এখন ঝুঁকির মুখে পড়েছে।

কবি মুহাম্মদ সাঈদ, যিনি ওই এলাকারই বাসিন্দা, বলেন, “জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের রহিমগঞ্জ গ্রামে বছরের পর বছর ধরে নদী ভাঙন চলছে। এবারও ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। পাউবো যেখানটায় কাজ করছে, সেটি মাত্র ৭০ মিটার এলাকা। এতে পুরো গ্রাম বা জাদুঘরের আশপাশ রক্ষা করা সম্ভব হবে না।”

প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের মত

পাউবোর বরিশাল অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাবেদ ইকবাল বলেন, “সন্ধ্যা নদীর ওই অংশে আমাদের প্রতিরক্ষামূলক প্রকল্পের আওতায় ৭০ মিটার এলাকাজুড়ে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। আমরা পরিস্থিতি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করছি। যদি দেখা যায় ভাঙন থেমে নেই, তাহলে প্রয়োজনীয় অতিরিক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

স্থায়ী সমাধানের দাবি

স্থানীয়রা বলছেন, শুধুমাত্র জিও ব্যাগ ফেলে কিংবা অস্থায়ী বাঁধ তৈরি করে দীর্ঘমেয়াদে নদীভাঙন রোধ করা সম্ভব নয়। তারা জাদুঘর, গ্রন্থাগার এবং গ্রাম রক্ষায় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও স্থায়ী প্রতিরক্ষামূলক বাঁধ নির্মাণের জোর দাবি জানান।

ঐতিহাসিক গুরুত্ব

উল্লেখ্য, বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য সাহসিকতার জন্য সর্বোচ্চ সামরিক খেতাব লাভ করেন। তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এই জাদুঘর নির্মাণ করা হলেও আজও এটি অবহেলা ও অনিরাপত্তার মধ্যে রয়েছে।

3 thoughts on “জাদুঘর রক্ষায় ৭ হাজার জিও ব্যাগ পাউবোর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

নামযের সময়সূচি