নিজস্ব প্রতিবেদক
নেদারল্যান্ডসের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক ভাইস মিনিস্টার পাসকাল গ্রোটেনহুইস মঙ্গলবার ঢাকার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। বৈঠকে দুই পক্ষ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা সম্প্রসারণের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন। এতে কৃষি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, প্রযুক্তি, যুব উন্নয়ন এবং তরুণ ও নারী উদ্যোক্তাদের জন্য সামাজিক ব্যবসা তহবিল গঠনের বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ স্থান পায়।
এছাড়া, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণ নিয়েও মতবিনিময় করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বর্তমান সরকার আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও উৎসবমুখর নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি আরও জানান, আগামী জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করতে পারবে না, কারণ দলটির কার্যক্রম বর্তমানে নিষিদ্ধ এবং নির্বাচন কমিশন তাদের নিবন্ধন স্থগিত করেছে।
01612346119
অধ্যাপক ইউনূস এও উল্লেখ করেন যে, আগের স্বৈরাচারী সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ভোট না দেওয়ার কারণে এবার রেকর্ডসংখ্যক নতুন ভোটার প্রথমবারের মতো ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। তিনি বলেন, এটি দেশের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত, কারণ সেই তরুণরা যারা গণঅভ্যুত্থানের সময় বিভিন্ন শহরে দেয়ালে গ্রাফিতি ও চিত্র এঁকেছিলেন, এবার তারা ভোট দিতে আসবেন।
ডাচ ভাইস মিনিস্টার বাংলাদেশ সরকারের নির্বাচন প্রস্তুতি প্রশংসা করেন এবং বলেন, সীমিত সময়ের মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের হাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। এছাড়া, তিনি বাংলাদেশের শ্রম আইন সংস্কারকেও স্বাগত জানান, যা নেদারল্যান্ডসসহ ইউরোপের বিনিয়োগ আকর্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। চলতি মাসের শুরুতে উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদনের পর রাষ্ট্রপতি এই আইনগুলোতে স্বাক্ষর করেছেন।
গ্রোটেনহুইস আরও জানান, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই করার পরিকল্পনা করছে, যা শিগগিরই সম্পন্ন হবে এবং নেদারল্যান্ডসের বিনিয়োগ বাংলাদেশে আরও বৃদ্ধি পাবে। তিনি বলেন, গত পঞ্চাশ বছর ধরে নেদারল্যান্ডস ও বাংলাদেশ উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে। এখন তারা এই সম্পর্ককে সমতা ও অংশীদারত্বের ভিত্তিতে রাজনীতি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগে আরও দৃঢ় করতে চায়। ডাচ ভাইস মিনিস্টার উল্লেখ করেন, নেদারল্যান্ডসের বিভিন্ন কোম্পানি যারা এতদিন বাংলাদেশ থেকে পণ্য আমদানি করেছে, তারা এখন সরাসরি বিনিয়োগে আগ্রহী এবং অংশীদার হিসেবে কাজ করতে চায়।
এই সাক্ষাৎ ও আলোচনার মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ককে আরও মজবুত করার পাশাপাশি, নতুন বিনিয়োগ, প্রযুক্তি ও সামাজিক উদ্যোগ সম্প্রসারণের জন্য এক নতুন ধারা তৈরি হচ্ছে। উভয় পক্ষই সহযোগিতা বৃদ্ধি ও দ্বিপাক্ষিক উন্নয়নের বিষয়ে দৃঢ় প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন।
